মোটা মেয়ে যখন বউ - রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প Romantic LOVE story in bangla

 

আমি তানভীর আহামেদ। ছোটখাটো একটা চাকরি করি। পরিবারে তিনজন ছিলাম আজ থেকে চারজন। মানে আজ আমি বিবাহিত জীবনে পদার্পণ করলাম।অনেক জল্পনা-কল্পনার অবশান ঘটিয়ে বিয়েটা করেই ফেলেছি।জল্পনা-কল্পনা বলছি কারণ, আমার বিয়ের জন্য অনেক দিন ধরেই মেয়ে দেখা হচ্ছে।কিন্তু সমস্যা একটাই মেয়ে গুলো বেশী সুন্দরী হয়ে যাচ্ছে। শুনেছি সুন্দরী মেয়েদের অহংকার বেশি। তাই সুন্দরীদের প্রতি একটু এলার্জি আছে। তো অনেক মেয়ে দেখার পর একজনকে পছন্দ হলো। কিন্তু বাবা-মায়ের পছন্দ হলো না। কারণ মেয়ে মোটা।কিন্তু আমার এই মেয়েকেই পছন্দ হয়েছে। কারণ বউয়ের দিকে মানুষ নজর কম দিবে। তো এখন বাসর ঘরের দিকে যেতে হবে। ভাবছি বউকে একটু হার্ট করবো।যেই ভাবা সেই কাজ।


তানভীরঃ এই যে আপনার নাম কি?

বউঃ জ্বি আমার নাম প্রিয়াঙ্কা।সবাই পিকু বলে ডাকে।

তানভীরঃ আচ্ছা সরে বসুন।আমি ঘুমাবো।

প্রিয়াঙ্কাঃ কেনো?

তানভীরঃ তো কি আপনার সাথে গল্প করবো?

প্রিয়াঙ্কাঃ ইচ্ছে হলে করতে পারেন।

তানভীরঃ নিজের চেহারা দেখেছেন?মোটা আটার বস্তা একটা।

প্রিয়াঙ্কাঃ বিয়ের আগেই তো দেখেছেন আমি মোটা,দেখতে খারাপ। তাহলে বিয়ে করলেন কেনো?

তানভীরঃ বাবা মায়ের মন রাখতে।

প্রিয়াঙ্কাঃ আচ্ছা, আপনি শুয়ে পড়ুন।

তানভীরঃ হুম।


পিকু এবার একটু সরে বসলো।আমিও শুয়ে পড়লাম।পিকু আসলে অতটা মোটা না অনেক মায়াবী।এজন্যই ওকে আমার পছন্দ হয়েছে।পিকু পাশে বসে কাদছে।মনে হয় একটু বেশি বলে ফেলেছি।


তানভীরঃ ওই কাদছেন কেনো?

প্রিয়াঙ্কাঃ না এমনি।

তানভীরঃ এমনি এমনি না কেদে এখন ঘুমিয়ে পড়ুন।

প্রিয়াঙ্কাঃ আপনি ঘুমান আমি পড়ে ঘুমাবো।

তানভীরঃ বেশি কথা না বলে ঘুমিয়ে পড়ুন।

প্রিয়াঙ্কাঃ আচ্ছা ঠিক আছে।


ঘুমিয়ে পড়লাম দুজনে।শুনেছি বাসর রাতে মানুষ কত কি করে।আর আমরা ঘুমাচ্ছি।হোক না আমাদের বাসর রাতটা একটু ভিন্ন তাতে সমস্যা কি?সকালে বিবি ডাকতেছে আমারে।খুব নরম শুরে।আমি একটু তাকালাম ওর দিকে অসাধারণ লাগছে ওকে।গুসল করে এসেছে।চুল গুলো এখনো শুকাই নি।এত সুন্দর লাগছে বলে বোঝাতে পারবো না।


প্রিয়াঙ্কাঃ এই যে উঠুন।

তানভীরঃ কি দরকার?

প্রিয়াঙ্কাঃ আপনার চা।

তানভীরঃ আপনাকে কে চা আনতে বলেছে?

প্রিয়াঙ্কাঃ মা বলেছে।

তানভীরঃ আচ্ছা আপনি যান।


এইভাবে প্রায় প্রতিদিন পিকুকে কড়া কথা শোনাতাম।প্রথম প্রথম কষ্ট পেলেও এখন অভিমান করে।যাই হোক আমার খুব ভালো লাগে।একমাস পার করে দিলাম এভাবেই।এখন পিকুকে কড়া কথা শোনায় তবে আগের মতো না।অনেক ভালোবেসে ফেলেছি।কিছু বলতেই পারি না।তবুও আজকে শোনালাম। অফিসে যাবো এমন সময় পিকু আসলো।


তানভীরঃ কি চাই এখানে?

প্রিয়াঙ্কাঃ আমি টাই বেধে দিবো?

তানভীরঃ না আমি খুব ভালো পারি।

প্রিয়াঙ্কাঃ আচ্ছা একটা কথা বলবা?

তানভীরঃ কি কথা? 

প্রিয়াঙ্কাঃ আমাকে কি তোমার একটুও পছন্দ না?

তানভীরঃ তোমার মতো আলুর বস্তাকে কে পছন্দ করবে?

প্রিয়াঙ্কাঃ ঠিক বলেছো।

তানভীরঃ হুম।

প্রিয়াঙ্কাঃ তাহলে আমার এখানে থেকে কি লাভ।আমি আজই বাবার বাড়ি চলে যাবো।

তানভীরঃ যাওয়ার আগে একটা ফোন দিও।

প্রিয়াঙ্কাঃ ফোন দিতে হবে কেনো?

তানভীরঃ যেতে হবেনা?

প্রিয়াঙ্কাঃ কোথায় যাবে?

তানভীরঃ শ্বশুর বাড়িতে দুজনে একসাথে যাবো।

প্রিয়াঙ্কাঃ তুমি যাবে না আমার বাড়িতে।

তানভীরঃ একশো বার যাবো কি করবা?

প্রিয়াঙ্কাঃ গেলেই বুঝতে পারবা।

তানভীরঃ আচ্ছা দেখা যাবে।


আমি অফিসে চলে আসলাম।অফিস থেকে ফিরে শুনি পিকু চলে গেছে।আমিও রওনা দিলাম.. শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে কলিংবেল চাপ দিতেই নিধি দরজা খুলে দিলো।নিধি আমার একমাত্র শালি।


নিধিঃ কি ব্যাপার জিজু এতরাতে।বউয়ের টানে বুঝি?

তানভীরঃ এত সুন্দর শালী থাকতে বউয়ের টানে আসা লাগে?

নিধিঃ ধ্যাত পাম দিয়েন না।

তানভীরঃ তোমার মুটকি বোন কোথায়? 

নিধিঃ তার রুমেই আছে।


এবার আমি পিকুর রুমের দিকে এগোলাম।দেখি পিকু শুয়ে আছে।আমি খাটে বসতেই পিকুও উঠে বসলো।


প্রিয়াঙ্কাঃ তুমি আসছো কেনো?

তানভীরঃ বউকে দেখতে।

প্রিয়াঙ্কাঃ কে তোমার বউ? এখানে কারো বউ নেই।

তানভীরঃ রাগ করেছো বুঝি?

প্রিয়াঙ্কাঃ রাগ করতে যাবো কেনো?

তানভীরঃ তাহলে চলে আসলে কেনো?

প্রিয়াঙ্কাঃ কেউ আমাকে পছন্দ করে না।তাহলে ওখানে থাকবো কেনো?

তানভীরঃ কে বলেছে পছন্দ করেনা?

প্রিয়াঙ্কাঃ তুমিই তো বলেছো আমি মোটা দেখতে খারাপ। আমাকে সহ্য করতে পারোনা। 

তানভীরঃ ওটাতো তোমাকে রাগানোর জন্য বলেছি।

প্রিয়াঙ্কাঃ তাই বলে এতদিন?

তানভীরঃ হুম প্রতিক্ষার ফল ভালো হয়।

প্রিয়াঙ্কাঃ তাহলে প্রপোজ করো।

তানভীরঃ ওগো মুটকি তুমি আমাকে তোমার চাপে চ্যাপ্টা করতে পারবা?

প্রিয়াঙ্কাঃ হুম,খুব পারবো...


এই হচ্ছে আমার মুকটি বউ..ভালোবাসতে শুধু ভালো একটা মন লাগে..আসল ভালোবাসা টাকা,পয়সা, চেহারা দেখে হয় না...আসল ভালোবাসা হয় দুটি মনের মিলনে...